রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরীর (৪০) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পৌরসভার বগুলাগাড়ী গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত মেহেরীন ওই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়া গ্রামের মৃত মুহিত চৌধুরী ও ছাদেরা চৌধুরী দম্পতির কন্যা এবং একই এলাকার মনসুর হেলালের স্ত্রী। তিনি রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা ভার্সনের কো-অর্ডিনেটর (তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি) শিক্ষিকা ছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ‘দুপুরের পর একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। দাফনের আগে বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে মেহেরীন চৌধুরী জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে অংশ নেন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।’
এ সময় স্থানীয়রা বলেন, ‘জীবনের তোয়াক্কা না করে শিশু শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে মেহেরীন চৌধুরী আত্মবিসর্জন দিয়েছেন। তার এই আত্মত্যাগ শিক্ষকতার মহান পেশাকে আরও মহিয়ান করেছে।’
শোকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেহেরীন চৌধুরী স্বামী মনসুর হেলাল জানান, “শেষ রাতে হাসপাতালে ওর সঙ্গে আমার শেষ দেখা। আইসিইউতে শুয়ে শুয়ে ও আমার হাত নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরেছিল। বলেছিল, ‘আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না।’ আমি ওর হাত ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে ঠিকভাবে ধরতেও পারিনি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না? সে বলল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?’ আমি আমার সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করেছি ওকে বাঁচাতে, কিন্তু পারিনি। আমার দুইটা ছোট ছোট বাচ্চা এতিম হয়ে গেল।