Monday, July 28, 2025

এজলাসে হাসলেন খায়রুল হক, বিচারক বললেন এ গ্রেপ্তারে অনেক কিছু শেখার আছে

আরও পড়ুন

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হলে শুনানিকালে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

খায়রুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। ৬ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

শুনানিতে আদালত কক্ষে এক পর্যায়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর মোবাইল ফোনের আলোতে শুনানি চলতে থাকে।

আরও পড়ুনঃ  দেশটাকে পুড়িয়ে ফেলছে ওরা, দেশটা রক্ষা করেন: ব্যারিস্টার সুমন

আলোচিত এ শুনানিতে সাবেক এই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ ও কটাক্ষ উঠে আসে। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম বলেন, ‘হাসিনার কৃতদাস ছিলেন খায়রুল হক। তার নির্দেশে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন তিনি। এখন সেই অবিচারের ফলেই নিজেই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন।’

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি হত্যা মামলার আসামি। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের উসকানিদাতা। তার সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করি।’

পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার আরও বলেন, ‘তিনি কলঙ্কিত একজন প্রধান বিচারপতি। তার কারণে ১৭ বছর ধরে বহু মানুষ গুম-হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমনকি শেখ হাসিনাও স্বৈরাচার হতে বাধ্য হয়েছেন।’ এ সব বক্তব্য শুনে খায়রুল হককে আদালতে হাসতে দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ  জাতীয় সমাবেশ যাওয়ার পথে জামায়াত নেতা আবু সাইদ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ‘এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে দেশের প্রধান বিচারপতি হন, তা বোধগম্য নয়। তিনি ছোট থেকেই পাপী ছিলেন। শত বছর বেঁচেও তার পাপমোচন সম্ভব নয়।’

শুনানি শেষে বিচারক বলেন, ‘মানুষের শ্রদ্ধা কর্মের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। কর্মের মধ্য দিয়েই ভালবাসা বা ঘৃণা তৈরি হয়। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে অনেক কিছু শেখার আছে। আপনি যদি আমাকে শ্রদ্ধা করেন, সেটা আমার কর্মের কারণে। ঘৃণাও যদি করেন, সেটাও আমার কর্মের ফল।’ পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আরও পড়ুনঃ  গোপালগঞ্জের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে

উল্লেখ্য, এ বি এম খায়রুল হক ছিলেন দেশের ঊনবিংশতম প্রধান বিচারপতি। তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাত, বিতর্কিত রায় এবং সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করার অভিযোগ বহুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল।

এই প্রথম কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে খুনের মামলায় গ্রেপ্তার ও জেলহাজতে পাঠানোর ঘটনা ঘটল

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ