কয়েক মাস ধরে চলা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই দেশ থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যকার উত্তেজনা সম্প্রতি ভয়াবহ সামরিক সংঘাতে রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পাল্টাপাল্টি বিমান ও রকেট হামলা চালিয়েছে প্রতিবেশী দেশ দুটির সামরিক বাহিনী। কম্বোডিয়ার সামরিক স্থাপনায় হামলায় মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়াও রকেট হামলা চালিয়েছে।
লন্ডন-ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, দুটি দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং অস্ত্রাগারের তথ্য তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে…
বাজেট ও স্থলবাহিনী
থাইল্যান্ড: ন্যাটো সদস্যের বাইরে অন্যতম মার্কিন মিত্র থাইল্যান্ডের একটি বিশাল ও সমৃদ্ধ সামরিক বাহিনী রয়েছে। এর প্রতিরক্ষা বাজেট (২০২৪ সাল অনুযায়ী) ৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীতে দেশটির ৩ লাখ ৬০ হাজারের বেশি সক্রিয় সশস্ত্র রয়েছে।
কম্বোডিয়া: ২০২৪ সালে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ৩০০ সক্রিয় প্রতিরক্ষা কর্মী। ১৯৯৩ সালে দেশটির প্রাক্তন কমিউনিস্ট সামরিক বাহিনী এবং দুটি অন্যান্য প্রতিরোধ বাহিনীর একীভূতকরণের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
থাইল্যান্ড এয়ার ফোর্স: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সজ্জিত ও প্রশিক্ষিত বিমানবাহিনীর মধ্যে থাইল্যান্ড একটি। এই বাহিনীতে প্রায় ৪৬ হাজার সদস্য এবং ১১২টি কমব্যাট বিমান রয়েছে, যার মধ্যে আছে ২৮টি এফ-১৬ ও ১১টি সুইডিশ গ্রিপেন যুদ্ধবিমান। এছাড়াও তাদের বহরে আছে প্রায় এক ডজন উড়োজাহাজ এবং কয়েক ডজন হেলিকপ্টার।
কম্বোডিয়া এয়ার ফোর্স: দেশটির বিমানবাহিনীর সদস্য সংখ্যা মাত্র দেড় হাজার। এছাড়া দেশটির বিমানবাহিনীতে ১০টি পরিবহন বিমান ও ১০টি পরিবহন উড়োজাহাজের ছোট একটি বহর আছে। কম্বোডিয়ার বিমানবাহিনীর কাছে নেই কোনো যুদ্ধবিমান। তবে ১৬টি বহুমুখী অভিযান পরিচালনাকারী উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি সোভিয়েত যুগের এমআই-১৭ এবং ১০টি চীনা জেড-৯এস।
থাইল্যান্ড নৌবাহিনী: থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী বেশ বড়। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। এতে নৌ-বিমান ইউনিট, মেরিন, উপকূলরক্ষী বাহিনী ও নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যরা রয়েছেন। থাই নৌবহরে একটি বিমানবাহী রণতরী, সাতটি ফ্রিগেট, ৬৮টি টহল ও উপকূলীয় যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।
এছাড়া থাই নৌবহরে কয়েকটি উভচর এবং অবতরণকারী জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজে শত শত সৈন্য ও ১৪টি ছোট অবতরণকারী বিমান রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। দেশটির নৌবিমান ইউনিটের রয়েছে উড়োজাহাজ ও ড্রোনের নিজস্ব বহর। মেরিন কোরে ২৩ হাজার সদস্য আছেন। এই কোরের নিয়ন্ত্রণে আছে কয়েক ডজন সশস্ত্র যুদ্ধযান।
কম্বোডিয়ার নৌবাহিনী: কম্বোডিয়ান নৌবাহিনীর সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ২ হাজার ৮০০। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০০ নৌ পদাতিক সেনা। ১৩টি টহল এবং উপকূলীয় যুদ্ধ জাহাজ এবং একটি উভচর অবতরণ জাহাজ রয়েছে দেশটির নৌবহরে।